মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে স্টেশন বাজারস্থ জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি লোকমান আহাম্মেদ খান লোটনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর-৫ সদর আসনের ধানের শীষ প্রতীকের মনোনীত প্রার্থী আইনজীবী শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী ,
অতিথির বক্তব্যে বিএনপি নেতা ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, আমি জামালপুরবাসীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই একাত্তরের চেতনা আজ কলঙ্কিত করার জন্য গভীর চক্রান্ত চলছে। একাত্তরের চেতনা কলঙ্কিত হয়ে গেলে এদেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হয়ে পড়বে। গণতন্ত্র বিপন্ন হয়ে পড়বে। সেই স্বাধীনতা বিরোধীচক্র আবার মাথাচারা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের গ্রামে-গঞ্জে, পাড়া-মহল্লায় সব জায়গায় সতর্ক থাকতে হবে। ২০ লক্ষ মানুষের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রকে আমরা মাথাচার দিয়ে উঠতে দিবোনা।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার মূলমন্ত গণতন্ত্র। সেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সর্বশেষ সংগ্রাম ২৪ এ সেই গণচেতনা, ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে আমরা স্বৈরাচার, ভোট ডাকাত, লুটেরা, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা মুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। চেতনাকে লালন করে প্রকৃত স্বৈরাচার বা স্বৈরাচারের কোন দোসরকে আমরা বাংলাদেশে আবার মাথা চারা দেওয়ার সুযোগ দেব না।
ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ও ২৪ এর চেতনা বিরোধী চক্র যারা প্রশাসনে রয়েছেন। এখনো সময় রয়েছে সর্তক হন। আপনাদের কোন কর্মকাণ্ড এদেশের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গেলে, জনগণের বিরুদ্ধে গেলে, একাত্তরের চেতনার বিরুদ্ধে গেলে, আপনাদেরকেও দালাল এবং প্রকৃত স্বৈরাচারের পরিণতি ভোগ করতে হবে। আগামী ১২ ই ফেব্রুয়ারি ২০২৬ সাল বাংলাদেশের মানুষের ১৭ বছরের সংগ্রামের পরে প্রতীক্ষিত নির্বাচন।
তিনি বলেন, সেই নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হওয়ার জন্য বিএনপি'র সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থা নিতে হবে। সতর্কভাবে পথ চলতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করতে হবে। ইতিমধ্যে আমরা দেখেছি নির্বাচন বানচাল করার গভীর চক্রান্তের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে আমাদের দলীয় প্রার্থীর উপর গুলিবর্ষন করা হয়েছে। ঢাকায় হাদির উপর গুলিবর্ষন করা হয়েছে। আরো চক্রান্ত চলছে। সেই স্বাধীনতা বিরোধী ও ২৪ এর চেতনা বিরোধী চক্রের বিরুদ্ধে আমাদেরকে গ্রামেগঞ্জে, পাড়া মহল্লায়, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে, উপজেলা, পৌরসভা এবং জেলায় সর্বস্তরের সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে সবাইকে।
মামুন বলেন, এই গণতন্ত্র মুক্তি সংগ্রামে দীর্ঘদিন নেতৃত্ব দিয়েছেন এদেশের অভিসাংবাদিত নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। যিনি নিজের জীবনের ত্যাগ স্বীকার করে এই জাতির মুক্তির সংগ্রামে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে আজকে তিনি নিজেই মৃত্যুর মুখে পতীত। দীর্ঘদিন যাবৎ উনি মৃত্যুর সন্নিকটে। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। আমরা সকলেই মন খুলে আল্লাহর কাছে দোয়া করব। আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ করে দেন।
জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম খান সজীবের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শহর বিএনপির সভাপতি লিয়াকত আলী, সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক খান দুলাল, বর্তমান কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আহসানুজ্জামান রুমেল, খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান আরমান, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সফিউর রহমান শফি, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন মিলন প্রমুখ।
আলোচনা শেষে এক আনন্দ র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বকুলতলায় গিয়ে শেষ হয়।
অপর দিকে বিকেলে শহরের ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব সোহেল রানা খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইকরামুল হোসেন মানিক ও জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিকের নেতৃত্বে এক বিশাল বিজয় মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বকুলতলায় গিয়ে শেষ হয়।
জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মো. সোহেল রানা খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক শফিকুল ইসলাম শফিক,
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইকরামুল হোসেন মানিক, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক, জেলা শ্রমিক দলের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক শামীম হোসেন মঙ্গল, জেলা যুবদলের সদস্য জাকির হোসেন জনি, ইমরান কাওছার, মেহেদী হাসান ইলি, সাদ্দাম হোসেন, সাইফুল ইসলাম, রকি তালুকদার, হিরা, মাসুম মোল্লা প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে যুবদল নেতা সোহেল রানা খান বলেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কে? তিনি হচ্ছেন এদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এবং তিনি হচ্ছেন রণাঙ্গনের বীর। শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের বন্দী হয়ে পরবর্তী সময়ে সে সহ তাদের দলের সকল নেতাকর্মীরা ইন্ডিয়ায় পালিয়ে গিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু আমাদের প্রিয় নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তিনি কি করেছেন। মহান স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পরে নিজের জীবনের মায়া না করে রণাঙ্গনে অস্ত্র কাঁধে নিয়ে যুদ্ধ করে এ দেশকে স্বাধীন করেছেন। আমরা একটা স্লোগান দেই। স্বাধীনতার অপর নাম জিয়াউর রহমান। এই স্লোগানটি আমরা কেন দেই? এই স্বাধীনতার মূল নায়ক হচ্ছেন জিয়াউর রহমান। বিগত সময়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ। এই রণাঙ্গনের বীর তাকেও রাজাকার বানানোর চেষ্টা করেছেন। এই স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টবাদরা এত অন্যায় অপকর্ম করেছে যার জন্য এই দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
বিজয় র্যালিতে জেলা যুবদল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল ও জেলা ছাত্রদলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।