
বাংলাদেশের কৃষকের ভাগ্যোন্নয়নে, বিএনপির পরিকল্পনা ও নির্ভরযোগ্য কৃষক কার্ড, দেশ গড়ার পরিকল্পনা শীর্ষক কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রাঙ্গণে এ সমাবেশের আয়োজন করেন জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহাম্মেদ।
জেলা কৃষক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাবু বিঞ্চ চন্দ্র মন্ডলের সভাপতিত্বে কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহাম্মেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি নেতা শামীম আহাম্মেদ বলেন, কৃষক ভাইয়েরা আমার আহব্বানে এই মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এসে আমাকে ধন্য করেছেন তার জন্য আপনাদেরকে সংগ্রামী শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। প্রিয় কৃষক ভাইয়েরা আজকে আমরা এখানে আপনাদের বিষয়ে কিছু কথা বলতে চাই। আমাদের নেতা আঠারো কোটি মানুষের নেতা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জাতির সামনে যে ৩১ দফা উপস্থাপনা করেছিলেন তারই ধারাবাহিকতায় আজকে এই জায়গায় আমরা দেশ গড়ার পরিকল্পনা করতে উপস্থিত হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আমার নেতা, বিএনপি নেতা, আঠারো কোটি মানুষের নেতা তিনি মহা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। আমাদের ভাগ্যকে ত্বরান্বিত করার জন্য সারা বাংলাদেশে উন্নয়নের মহাসড়কে উঠার জন্য একটি পরিকল্পনা হাতে নেয়। তারই অংশ হিসেবে আজকের এই কৃষক সমাবেশ। কৃষকের জন্য নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য এই কৃষক কার্ড। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আল্লাহ যদি তৌফিক এবং সাহায্য করেন আমার নেতা আঠারো কোটি মানুষের নেতা কৃষকের কথা ভেবে উনি কৃষক কার্ডের ব্যবস্থা করবেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রায় বিশ কোটি মানুষ রয়েছে। এই বিশ কোটি মানুষের মধ্যে আনুমানিক দেড় কোটি মানুষের মতো সারা বাংলাদেশে কৃষক রয়েছে। এরা সরাসরি কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত। এই দেড় কোটির ভিতরে উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক কৃষক নিম্ন পর্যায়ের। অধিকাংশ কৃষক নিম্ন পর্যায়ে এবং কিছু কৃষক মাঝামাঝি পর্যায়ে। এর মধ্যে কিছু কৃষক স্বাবলম্বী। স্বাবলম্বী কৃষকরা তাদের জমিগুলো বর্গা দিয়ে দেয়। সারা বাংলাদেশে যে কৃষি জমি রয়েছে এগুলো সার্বিয়ার মাধ্যমে একত্রিত করা হবে। নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসা হবে। সরকার প্রধানের মাথায় থাকবে এবং লিফলেটের মাধ্যমে যেগুলো আছে সেগুলোর ব্যবস্থা করা হবে।
শামীম আহমেদ বলেন, এইটা স্মার্ট কার্ড। আপনার জমি হয়তোবা অল্প আছে। আরেকজনের একটু বেশি আছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে যেমন বন্যা, খরা, ঝড়, তুফানে ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে যায় না? এতে সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ছোট কৃষক। আপনি চাষাবাদ করবেন। আগামীকাল কোন ক্ষেতে সার দিবেন, সেই দিন বৃষ্টি নেমে পড়ল। ওই বৃষ্টি আপনার মাথায় পড়ে নাই। ওই বৃষ্টিটা আপনার মনের মধ্যে এমন দাগ দেয়। আধুনিকভাবে আবহাওয়া অধিদপ্তর অ্যাপস্ এর মাধ্যমে, গুগলের মাধ্যমে আগামীকাল বৃষ্টি হবে কিনা খেতে সার দিতে পারবেন কিনা সেই মেসেজটা আপনি পাবেন।
তিনি আরও বলেন, অনেক সময় আমাদের টমেটো বা বেগুন অনেক বেশি চাষাবাদ হয়। সেই সময় মানুষও নেয় না, গরু বা মহিষেও খায়না। আবার অনেক সময় মানুষ চড়া দাম দিয়ে কিনে খায়।টমেটো, বেগুন এবং ধানের একই অবস্থা। এই থেকে আমাদের পরিত্রান পেতে হবে। সবজি রাখার কোল্ড স্টোরেজের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে কৃষক সরাসরি কোলেস্টোরেজে রাখতে পারে। আমাদের সবাইকে নিয়ে তারেক রহমান আধুনিক চিন্তাভাবনায় ব্যস্ত রয়েছেন। আগামী নির্বাচন যতই কঠিন হোক যতই বাঁধাগ্রস্থ হোক তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি অবশ্যই জয়লাভ করবে। তাহলে তারেক রহমান সাহেব প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এই যে চিন্তা চেতনা গুলি আগে থেকেই করছেন। উনি ১৭ বছর নির্বাসনে রয়েছেন। আপনাকে আমাকে নিয়ে এবং আঠারো কোটি মানুষকে নিয়ে চিন্তা চেতনায় ব্যস্ত থাকেন। উনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। এই দেড় কোটি কৃষক যদি স্বাবলম্বী হতে পারে এবং অর্থনৈতিকভাবে দাঁড়াতে পারে তাহলে দেশটা কোথায় যাবে? উন্নতশীল দেশ হবে ইনশাআল্লাহ। তারেক রহমান সাহেবের এই চিন্তা ভাবনা। আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিএনপি সরকার গঠন করলে এই সুযোগ-সুবিধা গুলি পাবেন ইনশাল্লাহ।
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আপনারা যারা কৃষক রয়েছে এখানে। জামালপুর জেলায় কয়েক লক্ষ কৃষক আছে না? কৃষকের ক্ষোভ। ধানের শীষে চিটা হয় না। সেইটা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে, আপনাকে বুঝতে হবে। অজপাড়াগাঁয়ে মাঠে ময়দানে আপনাকে ধারে প্রান্তরে ধানের শীষের মার্কারে বুঝতে হবে। আপনার এলাকায় যে ব্যক্তি ধানের শীষ পেয়েছে তার সাথে আপনার মতভেদ থাকতে পারে। সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে তারেক রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার মুখের দিক চেয়ে এবং শহীদ জিয়াউর রহমানের দল করার স্বার্থে আঠারো কোটি মানুষের স্বার্থে সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ধানের শীষকে জয়ী করতে হবে ইনশাআল্লাহ।
জিয়া সাইবার ফোর্স জেলা শাখার সদস্য সচিব রিপন হোসেন হৃদয়ের সঞ্চালনায় কৃষক সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মেলান্দহ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আজম খান, মেলান্দহ পৌর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রেজাউল করিম রেজা, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রানা ম্যানশন, সদর থানা কৃষক দলের সাবেক আহবায়ক মাইনুল হক, ছাত্রদল নেতা কামরুল হাসান কাজল প্রমুখ।
সমাবেশের শুরুতেই ঢাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদীর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত এবং বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন মেলান্দহ উপজেলা বিএনপির নেতা আজম খান।
জেলা বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের সকল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন